শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন
সাঘাটা প্রতিনিধিঃ গত দুই মাস পূর্বে বন্যার কারনে নদীগুলো পানিতে কানায় কানায় উপছে উঠেছিল। অতি খরায় অব্যাহত পানি হ্রাসের ফলে তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র ও যমুনাসহ সবগুলো নদ-নদীর চ্যানেলগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে ফলে যে কোন সময় নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পুর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। আগষ্ট মাসের শেষের দিকে ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা ও যমুনায় পানি কমতে শুরু করেছে। এখন পানির নেবেল সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। ফলে নদীগুলো অসংখ্য শাখা প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে শীর্ণকায় রূপ নিয়েছে। নদী বুকে জেগে উঠেছে ছোট বড় অসংখ্য ডুবোচর। ফলে ওইসব চ্যানেলে শ্যালো চালিত নৌকাসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল করতে হিম শিম খাচ্ছে। মানুষজন চর থেকে সাঘাটা সদরে কেনা কাটা করতে এসে রাতে বাড়ী ফিরতে চিন্তায় থাকেন কোন সময় আটকে যায় নৌকা।
জানা যায়, ফুলছড়ি বালাসিঘাট, তিস্তামুখঘাট, সৈয়দপুর, এরেন্ডাবাড়ি, ফজলুপুর, সদর উপজেলার কুন্দেরপাড়া, কামারজানি, গিদারি এবং সাঘাটা নৌ বন্দরে চলাচলকারি চ্যানেলে পানি সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ওইসব নৌঘাট থেকে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর, কর্তীমারী, চিলমারি, রৌমারি, জামালপুরের ইসলামপুর, বাহাদুরাবাদ, দেওয়ানগঞ্জ, ঘুটাইল, ফুলছড়ির সানন্দবাড়ী, ফুটানী বাজার, জিগাবাড়ী, হরিচন্ডি, খোলাবাড়ী, খাটিয়ামারী, সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া, লালচামার, বেলকাসহ বিভিন্ন ঘাট দিয়ে এখন নৌকাসহ অন্যান্য নৌযান স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। ফলে চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক নৌঘাট বন্ধের পথে। এদিকে নদী বুকে চর জেগে ওঠায় অনেক স্থানে এখন পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয় চরবাসিকে। ফলে তপ্ত বালিরাশিতে জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে স্কল ছাএ- ছাএীদের কষ্টাটা বেশি লক্ষ করা গেছে।
সেপ্টেম্বরে শুরু থেকে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনাসহ ছোট বড় শাখা নদীর পানি দ্রত কমতে শুরু করে পানি। অব্যাহত পানি হ্রাসের ফলে নদীগুলো নিজেদের অস্তিত হারাতে বসেছে এখন। যমুনা নদীর পানি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে ঠেকেছে। নদীর বুকে চর জেগে উঠেছে এখন। চরগুলোতে কাঁশবনে ছেয়ে গেছে। নাব্যতা থাকায় স্বাভাবিক সময় সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বির্স্তীর্র্ণ চরাঞ্চলে যাতায়াতের জন্য ৩০টি রুটে নৌযান চলাচল করতো। এখন সেখানে অনেক রুটে যান্ত্রিক নৌকা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ফলে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে। ভরতখালী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মাহবুবর রহমান বলেন, নদী ড্রেজিং করা অতি জরুরী। ফলে নদী ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। সাঘাটা ঘাটের নৌ চালক রহিম মিয়া জানান, নৌকা নিয়ে যেতে এখন বড় কষ্ট, নদীর মধ্যে গিয়ে আটকে যায়। তখন যাএীরা পরে ভোগান্তিতে। যাত্রী আব্দুল লতিফ বলেন, এখনও নৌকা খুব একটা বালু চরে আটকা পড়ছেনা। যেভাবে পানি কমছে, তাতে আর দু এক মাস নৌকা চলাচলা স্বাভাবিকভাবে চলবে। পরে প্রতিদিনিই নৌকা আটকে পড়ার আশংকা বেশি। এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করা হলে সংশি¬ষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, অব্যাহত পানি হ্রাসের ফলে এ নদীগুলো আরও ভরাট হয়ে যাবে এবং নাব্যতা সংকটের মুখে পড়বে। সেজন্য অবিলম্বে নৌ চ্যানেলগুলো ড্রেজিং করে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে পদক্ষেপ নেয়া দরকার। দেশের নদীগুলো ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা সরকারের একটি মহাপরিকল্পনা রয়েছে। উল্লেখ, নৌকার বিকল্প চর বাসির ভরসা ট্রাটু ঘোরার গাড়ী ও মটর সাইকেল পরিবহন।